সল্টলেক সিটি ছেড়ে জেফারসন হোপ রওনা হওয়ার তিন সপ্তাহ পরের ঘটনা জেফারসন ফিরে আসার পর কী ঘটবে ভাবতেই মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে জনের। প্রাণাধিকা পালিতা কন্যা জন্মের মতো পর হয়ে যাবে সেদিন থেকে। কিন্তু মুখে হাসি এনে ব্যস্ত রেখেছে নিজেকে উদ্যোগ পর্বে। মেয়েকে মর্মোনের সঙ্গে বিয়ে দেবে না, গোড়া থেকেই এই ছিল ওর গোপন সংকল্প। ওটা আবার একটা বিয়ে নাকি। মাথা কাটা যায়। মানসম্মান খোয়াতে হয়। মর্মোন মতবাদ সম্বন্ধে জন ফেরিয়ারের ধারণা যাই থাকুক না কেন, এই একটি ব্যাপারে সে অনমনীয়। অথচ মনের কথা মনেই রাখতে হয়েছে। সাধুদের এই দেশে গোঁড়ামির বিরুদ্ধে কথা বলাটা বিপজ্জনক।

সত্যিই বিপজ্জনক। এতই বিপজ্জনক যে অত্যন্ত সাধু প্রকৃতির ব্যক্তিও ধর্ম নিয়ে নিজস্ব মতবাদ প্রকাশ্যে জাহির করতে ভয় পায়। ফিসফিস করে বলে একান্তে— পাছে কারো কানে যায়। কেননা, তৎক্ষণাৎ সোজা কথার বাঁকা মানে দাঁড় করানো হবে এবং ভয়ানক শাস্তি পেতে হবে। একদা যারা নিগৃহীত হয়েছে, এখন তারা নিজেরাই নিগ্রহ সৃষ্টি করে চলেছে নিজেদের মধ্যেই এবং সে-নিগ্রহ এত ভয়াবহ যে বর্ণনা দিয়ে তা বোঝানো যায় না। উটায় যে নিগ্রহ-যন্ত্র সেই মুহুর্তে সক্রিয় তার সমকক্ষ ব্যবস্থা কল্পনাও করতে পারবে না ইটালির গুপ্ত সমিতি, জার্মানদের vehmgericht অথবা, সেভিলের ইনকুইজিশন নামক ধর্মীয় তদন্ত সংস্থা।

এরা অজেয়, এরা রহস্যাবৃত— তাই এদের নিগ্রহ ব্যবস্থাও দ্বিগুণ ভয়াবহ। এদের সংগঠন সর্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞ— অথচ সে-সংগঠনকে কেউ দেখেনি, নাম শোনেনি। গির্জের বিরুদ্ধে যে রুখে দাঁড়িয়েছে, সে চিরতরে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। কোথায় গিয়েছে বা কী অবস্থায় আছে, কেউ জানতেও পারেনি! বউ ছেলে-মেয়েরা পথ চেয়ে বসে থেকেছে দিনের পর দিন মাসের পর মাস— কিন্তু গুপ্ত বিচারপতিদের বিচারে তার কী হাল হয়েছে— কেউ এসে সে-খবর শুনিয়ে যায়নি। রাগের মাথায় একটা কথাও যদি কেউ বলে ফ্যালে, বা কিছু করে ফ্যালে তাহলে তাকে ধরাধাম ত্যাগ করতে হয়েছে তৎক্ষণাৎ অথচ কাকপক্ষীও জানতে পারেনি মাথার ওপর ঝোলানো এই অদৃশ্য খড়গটির স্বরূপ কী, ভয়াবহ এই শক্তির চেহারা চরিত্র কী। লোকে ভয়ে কাঁপত এই কারণেই। বিজন মরুর বুকে বসেও অত্যাচারী এই শক্তির বিরুদ্ধে মনের কথা কানাকানি করতেও সাহস পেত না।

অস্পষ্ট অথচ ভয়ংকর এই শক্তির প্রথম প্রয়োগ ঘটেছিল কেবল যারা অবাধ্য— তাদের ওপরেই মর্মোন ধর্মমত গ্রহণ করেও যারা পরে তা বর্জন করতে চেয়েছে অথবা কলঙ্কিত করতে চেয়েছে। অচিরেই আরও ব্যাপকভাবে সক্রিয় হল কুটিল, করাল এই শক্তি। স্ত্রীলোকের জোগান কমে আসছিল মর্মোনদের মধ্যে— পুরুষ বেশি, মেয়ে কম। অথচ বহুবিবাহ প্রথাও প্রচলিত রয়েছে। নারীর সংখ্যা কমে এলে এ-মতবাদও ধোপে টিকবে না। অদ্ভুত গুজব শোনা যেতে লাগল তখন থেকেই। অনেকরকম বিচিত্র কাহিনি মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ল মর্মোনদের মধ্যে। যেসব জঙ্গলে রেড ইন্ডিয়ানদের মতো লুঠেরা নরহত্যাকারীদের কখনো দেখা যায়নি, সেসব জায়গাতেও নাকি আজকাল দেশত্যাগী অধিবাসী খুন হচ্ছে, তাদের শিবির লুঠ হয়ে যাচ্ছে। বয়স্কদের হারেমে নতুন নতুন স্ত্রীলোকের আমদানি ঘটছে। চোখে তাদের অশ্রু, কণ্ঠে শোকের হাহাকার, সর্ব অবয়বে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার অবর্ণনীয় ছাপ। সেই শোক, সেই অশ্রু, সেই অভিজ্ঞতা ম্লান হবার নয়। কিছু কিছু দুঃসাহসী ভ্ৰাম্যমাণ বললে, রাতের অন্ধকারে মুখোশধারী সশস্ত্র আততায়ীরা নাকি দল বেঁধে আসে বাঘের মতো নিঃশব্দ সঞ্চরণে— অসহায় পথচারীর সর্বনাশ করে অদৃশ্য হয়ে যায় দিগন্তে। এই গল্প, এই কাহিনি লোকের মুখে মুখে বার বার শোনা গিয়েছে, মিথ্যে যে নয় সে-প্রমাণও মিলেছে, আস্তে আস্তে তা একটা বিশেষ রূপ পরিগ্রহ করেছে, একটা নির্দিষ্ট নামে পর্যবসিত হয়েছে। আজও পশ্চিমের র‌্যাঞ্চ মালিকের কাছে ড্যানাইট ব্যান্ড বা অ্যাভেঞ্জিং অ্যাঞ্জেলস একটা হৃৎকম্পনকারী পৈশাচিক নাম— এ-নাম শুনলেই অনেক পাপাচার, অনেক দানবিক ঘটনার কাহিনি জাগ্রত হয় স্মৃতিতে।

      রহস্যময় এই সংগঠন সম্বন্ধে বিশদ খবর জানা যাওয়ার পর লোকের আতঙ্ক হ্রাস পাওয়ার বদলে আরও বৃদ্ধি পেল। নির্মম এই সমিতির সদস্য কে বা কারা, কেউ তা জানত না। ধর্মের নামে এই খুন জখম রাহাজানি নারকীয় কাণ্ড যারা চালিয়ে যাচ্ছে গুপ্তই রয়ে গিয়েছে তাদের নাম। অবতারদের অধৰ্ম, কুকীর্তি বা তার ক্রুর অভীপ্সার কথা যাকেই বলা যাবে, দেখা যাবে হয়তো সে-ই এই নারকীয় কর্মকাণ্ডের অন্যতম নায়ক। রাতের অন্ধকারে সে তখন আসবে, আগুন আর তরবারি প্রয়োগে কল্পনাতীত ক্ষতিপূরণ আদায় করে নিয়ে যাবে। নিকটতম প্রতিবেশীকেও কেউ তাই বিশ্বাস করত না। মনের কথা মনেই চেপে রাখত।

      একদিন বেশ ফুরফুর ভোরে গমখেত অভিমুখে রওনা হতে যাচ্ছে জন ফেরিয়ার, এমন সময় খট করে হুড়কো খোলার আওয়াজ শুনল বাগানের ফটকে। জানলা দিয়ে দেখল বলিষ্ঠ-আকৃতি, মধ্যবয়স্ক এক পুরুষ হন হন করে আসছে বাড়ির দিকে— চুল তার হলদেটে লাল। দেখেই হৃৎপিণ্ডটা ডিগবাজি খেয়ে এসে ঠেকল গলার কাছে— কেননা ব্রিগহ্যাম ইয়ং নিজেই যে বাড়ি বয়ে আসবে এ-যে ভাবাও যায় না। সন্ত্রাস আর কাঁপুনি যেন ফেটে পড়ল প্রতিটি লোমকূপের মধ্যে। সে যে জানে এর পরিণাম শুভ হতে পারে না কিছুতেই। শিউরে শিউরে উঠে জন দৌড়ে গেল মর্মোন প্রধানকে সাদর অভ্যর্থনা জানাতে। নিরুত্তাপ, গম্ভীর মুখে অভিবাদন গ্রহণ করল ব্ৰিগহাম ইয়ং। কঠিন মুখে জন ফেরিয়ারের পেছন পেছন এসে বসল বসবার ঘরে।

      হালকা রঙের চক্ষুপল্লবের তলা দিয়ে তীক্ষ্ণ চোখে জনকে নিরীক্ষণ করতে করতে বলল মর্মোন-গুরু— ব্রাদার ফেরিয়ার, তুমি যাদের বন্ধু পেয়েছ, তারা প্রত্যেকেই এ-ধর্মে প্রকৃত বিশ্বাসী। তুমি না-খেয়ে মরতে চলেছিলে মরুভূমির মাঝে। আমরা তোমাকে উদ্ধার করেছি, আহার্য দিয়েছি, নির্বিঘ্নে এই দৈবাদেশের রাজ্যে নিয়ে এসেছি, জমিজায়গার বেশ খানিকটা অংশ দিয়েছি, আমাদের ছত্রছায়ায় বড়োলোক হওয়ার সুযোগ দিয়েছি, ঠিক কিনা?

      ঠিক, জবাব দিল জন ফেরিয়ার। বদলে একটা শর্তই মেনে চলার কথা ছিল তোমার— এই ধর্মমতকে তুমি মনেপ্রাণে গ্রহণ করবে, সর্ব বিষয়ে নিষ্ঠা দেখাবে। কথা দিয়েছিলে অন্যথা হবে না। কিন্তু খবর আসছে, তুমি পায়ে ঠেলছ আমাদের ধর্মকে।

      কীভাবে জানান? দু-হাত ছুড়ে প্রতিবাদ জানায় জন ফেরিয়ার। সাধারণ তহবিলে আমি কি চাঁদা দিইনি? মন্দিরে যাইনি? আমি কি..?

      স্ত্রীরা কোথায় তোমার? ডাকো তাদের, কথা বলে যাই। আশপাশ তাকিয়ে বললে ইয়ং।

      বিয়ে আমি করিনি প্রয়োজন নেই বলে। আমি তো একা নয়— মেয়ে রয়েছে। তাকে দেখাশুনা করতে হয়। তা ছাড়া দেশের মেয়ের সংখ্যা কম— বিয়ের প্রয়োজন আমার চাইতে যাদের বেশি, তাদের প্রয়োজন তো মিটছে।

      তোমার এই মেয়ের ব্যাপারেই কথা বলতে এসেছি। মেয়েটি বড়ো হয়েছে— উটার ফুল বললে যা বোঝায়, সে তাই। গণ্যমান্য অনেকের চোখে পড়েছে, পছন্দও হয়েছে।

      জন ফেরিয়ারের অন্তরাত্মা শিউরে উঠল এই কথায়।

      অনেকরকম কথা কানে আসছে তোমার মেয়ে সম্পর্কে। সে নাকি একজন বিধর্মীর বাগদত্তা। এসব কথা নিছক গুজব বলেই ধরে নিচ্ছি। সবই গল্প— বিশ্বাস করতে চাই না।

      সেন্ট জোসেফ স্মিথের এয়োদশ উক্তি মনে আছে? প্রত্যেক মেয়ে বিয়ে হোক সমধর্মাবলম্বী পুরুষের সঙ্গে। বিধর্মীকে যে পতিত্বে বরণ করবে, সে মহাপাপে নিমজ্জিত হবে। ধর্মসূত্র তুমি অক্ষরে অক্ষরে মনে চল বলেই বলেছি, মেয়েকে নরকে ঠেলে দিয়ো না— এই পবিত্র উক্তির অন্যথা হতে দিয়ে না।

      জবাব দিল না জন ফেরিয়ার। নার্ভাসভাবে নাড়াচাড়া করতে থাকে ঘোড়ার চাবুক।

      এই একটি ব্যাপারে তোমার ধর্মবিশ্বাস আমরা যাচাই করব ঠিক করেছি— চার বয়স্কর অধিবেশনে এই সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। তোমার মেয়ের বয়স কম, কাজেই বুড়োর সঙ্গে বিয়ে হোক চাই না। তা ছাড়া, ওই ব্যাপারে তার নিজের মতের দামও দেওয়া হবে। আমাদের হারেমে পত্নী সংখ্যা অনেক। কিন্তু আমাদের ছেলেদেরও বউ থাকুক, এই আমরা চাই। স্ট্যানজারসনের এক ছেলে, ড্রেবারের দুই ছেলে। এরা খুশি হবে তোমার মেয়েকে পুত্রবধু রূপে পেলে। এদের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নিক তোমার মেয়ে। ওরা বড়োলোক, বয়সও কম, ধর্মে প্রকৃত মতি আছে। বলো কী বলবে?

      গ্রন্থিল ললাটে কিছুক্ষণ চুপ করে রইল ফেরিয়ার। তারপর বললে, ভাববার সময় দিন। মেয়ের আমার বয়স খুবই কম— বিয়ের বয়সই হয়নি।

      চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে ইয়ং বললে, একমাস সময় দিলাম ভাববার। একমাস পরে ওকে জবাব দিতে হবে।

      দরজা দিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে হঠাৎ ঘুরে দাঁড়াল ইয়ং। আরক্ত মুখে জ্বলন্ত চোখে বললে বজ্ৰকণ্ঠে, জিন ফেরিয়ার চার বয়স্কর আদেশ অমান্য করার চাইতে বরং তোমাদের দু-জনেরই হাড় সিয়েয়া ব্ল্যাঙ্কোর মরুভূমিতে পড়ে থাকাই ভালো।

      ছিটকে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল ইয়ং। যাওয়ার সময় এমন একটা ইঙ্গিত করে গেল হাত আর মুখের ভঙ্গিমায় যা রক্ত জল করার পক্ষে যথেষ্ট। শিহরিত অন্তরে জন ফেরিয়ার শুনল বারান্দায় নুড়ি মাড়িয়ে বেগে অন্তহিত হচ্ছে মর্মোন প্রধান।

      কথাটা পাড়বে মেয়ের কাছে, এমন সময় নরম হাতের ছোয়া লাগল কাঁধে। ঘাড় ফিরিয়ে দেখল মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাশে। ফ্যাকাশে, ভয়ার্ত মুখ দেখেই বুঝল সে সব শুনেছে।

      জন ফেরিয়ারের জিজ্ঞাসু চাহনির জবাবেই বললে লুসি, কী করব বল। গলা কী! সারা বাড়ি গম গম করছিল চেঁচানিতে। বাবাগো, কী করি বলো তো এখন?

      মেয়েকে কাছে টেনে নিয়ে হলদেটে লাল চুলে সস্নেহে কর্কশ হাত বুলোতে বুলোতে জন বললে, ঘাবড়াসনি! ব্যবস্থা একটা করবই। ওই ছোকরা সম্বন্ধে তোর মন ঠিক আছে তো?

      ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল লুসি। জোরে চেপে ধরল বাবার হাত। ওই তার জবাব। মুখে বলার দরকার হল না।

      জন বললে, জানি তোর মন কোথায়। ছেলেটাও ভালো। হিরের টুকরো। সবচেয়ে বড়ো কথা, সে খ্রিস্টান। এরা মুখে যতই ধর্মের কথা কপচাক না কেন, এদের চেয়ে শতগুণে ভালো। কাল নেভাদায় একটা দল যাচ্ছে। ওদের হাতেই খবর পাঠাব ছোড়াকে। জানি তো ঝঞ্জাটে পড়েছি শুনলেই দৌড়ে আসবে পাই পাই করে— হারিয়ে দেবে ইলেকট্রো টেলিগ্রাফকেও।

      প্রিয়বরের এহেন বর্ণনা বাবার মুখে শুনে সজল চোখে ফিক করে হেসে লুসি বলে, ও এলেই একটা ব্যবস্থা হবে। ওর মুখেই শোনা যাবে কী করা উচিত। তবে কী জান, যত ভয় তোমাকে। অবতারের বিরুদ্ধাচরণ করার শাস্তি নাকি ভয়ংকর— কত গল্প না কানে আসে। রেহাই কেউ পায় না— কী যে হয় তাদের কেউ জানাতেও পারে না।

      বাবা বললে, কিন্তু বিরুদ্ধাচরণ তো এখনও করিনি। যখন করব তখন দেখা যাবে। একমাস তো হাতে আছে! মাস ফুরানোর আগেই উটা ছেড়ে চম্পট দেব।

      উটা ছেড়ে চলে যাবে!

      তা ছাড়া আর পথ নেই।

      তোমার চাষবাস?

      নগদ টাকা বার করে নেব যতটা পারি। বাকিটা থাকবে পড়ে। সত্যি কথা বলতে কী, অনেকদিন ধরেই এখান থেকে চলে যাওয়ার কথা ভাবছি। এদের মতে একজনের হুকুমে ওঠবোস করা আমার ধাতে নেই। আমি আমেরিকায় জন্মেছি, স্বাধীনতা আমার রক্তে। এদের গোলামি আমার সহ্য হচ্ছে না। এদের রীতিনীতিও আমার কাছে আজও অদ্ভূত। বয়স হয়েছে বলে ভাবিসনি যেন নতুন কিছু শেখবার ইচ্ছে আর নেই। তবে ফের যদি ও আসে এখানে গলাবাজি করতে, হয়তো গুলি খেয়ে মরতে হবে আমার হাতে।

      কিন্তু আমাদের বেরোতে দেবে না তো, বললে লুসি।

      জেফারসন এলেই একটা হিল্পে হয়ে যাবে। নে, চোখ মোছ। কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলিয়ে রাখিসনি। ছোড়া এসে ওই চোখে দেখলে আমাকেই একহাত নেবে। ভয়ের কিছু নেই! বিপদ একদম নেই।

      কথাগুলো জন ফেরিয়ার খুব প্রত্যয় নিয়ে বললেও সেই রাতে লুসি কিন্তু দেখল দরজা জানালা বেশ করে ভেতর থেকে বন্ধ করছে পিতৃদেব এবং শোবার ঘরে ঝোলানো মরচেপড়া পুরোনো শটগান নামিয়ে গুলি ভরছে!